পটিয়া কোলাগাঁও ইউনিয়নে খাস জায়গা ভরাট করা হচ্ছে, স্হাপনা নির্মাণের চলছে প্রস্তুতি
মোঃ হাসানুর জামান বাবু, চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার পটিয়া উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়নের কোলাগাঁও মৌজার সরকারি খাস জায়গা দখল করে মাটি ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।অভিযোগ সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা যায় পটিয়ার কোলাগাঁও ইউনিয়ন কোলাগাঁও মৌজার জে এম নং- আর এস দাগ নং-২৫৮৯,বিএস খতিয়ান নং- ০১ বিএস দাগ নাম্বার-২১১৭ জায়গার পরিমাণ ০.০৫০০ শতক ও বিএস দাগ নাম্বার-২১১৯ জায়গার পরিমাণ-০.০৪০০ শতক জায়গা এই দাগাধিভূক্ত জায়গা গুলো শতোভাগ সরকারি খাস জায়গা। সরকারি খাস জায়গা দখল করে ভরাট বা স্হাপনা নির্মাণ করতে হলে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি নিয়েই জায়গা ভরাট চাষাবাদ বা স্থাপনা নির্মাণ করার নিয়ম থাকলেও কোন নিয়ম কানুন সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই গত ১০ অক্টোবর-২৫ শুক্রবার বিকেলে হঠাৎ করে স্বদলবলে উপস্থিত হয়ে উপরে উল্লেখিত দাগাধিভূক্ত জায়গা ভরাট কাজ শুরু করেন কোলাগাঁও গ্রামের ০২ নং ওয়ার্ডে বাসিন্দা মৃত শেখ আহমেদের পুত্র মোঃ ওবায়দুল হক কাজল।
এই দিকে সরকারি খাস জায়গা ওবায়দুল হক কাগল কর্তৃক ভরাট করতে দেশে আজ ১২ অক্টোবর-২৫ রবিবার কোলাগাঁও ইউনিয়নের স্হানীয় বাসিন্দা রুস্তম আলী নামের এক ব্যক্তি সরকারি খাস জায়গা অনুমতি বা লিস নেওয়া ছাড়াই ভরাট করার প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে ভরাট কাজ বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চট্টগ্রামের সম্মানিত জেলা প্রশাসক,পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা , ও পটিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে তিনটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। রুস্তম আলী অভিযোগে ওবায়দুল হক কাগজকে পতিত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের দোসর ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম অর্থ জোগান দাতা ও ভূমিদস্যু উল্লেখ করে সরকারি খাস জায়গা ওবায়দুল হক কাগজ এর দখল থেকে মুক্ত করার আবেদন জানান।
এই বিষয়ে রুস্তম আলীর সাথে মুঠো ফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- এই আওয়ামীলীগ নেতা ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন বিরোধী অর্থ জোগান দাতা ওবাইদুল হক কাগজ গত সতেরো বছর আওয়ামী লীগের আমলে এই সরকারি খাস জায়গা ও অসহায় দরিদ্র মানুষের অনেক জায়গা জোর করে দখল করেছে,তার একটা বিরাট সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে , এই বাহিনীর দিয়ে ওবায়দুল হক কাগজ এখনো ভূমিদস্যুতায় লিপ্ত রয়েছে, তার প্রমাণ আমার আবেদনে উল্লেখিত সরকারি খাস জায়গা কারো অনুমতি ছাড়া নিজে দলবল নিয়ে ভরাট করা।আওয়ামীলীগের ১৭ বছর যাই ইচ্ছে তাই করেছে। আওয়ামী লীগের পতন হলেও ওবায়দুল হক গং এই কাজ এখনো চালিয়ে যাচ্ছে ইচ্ছে মতো। তাই আমি বাধ্য হয়ে আবেদন করেছি এলাকাবাসীর পক্ষে সরকারি খাস জায়গা রক্ষা করার জন্য।
অন্যদিকে এই বিষয়ে অভিযুক্ত অথাৎ যে সরকারি খাস জায়গা ভরাট করে স্হাপনা নির্মাণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সেই কোলাগাঁও ইউনিয়নের ০২ ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওবায়দুল হক কাগজ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সরকারি খাস জায়গা অনুমতি ছাড়া ভরাট করার কথা স্বীকার করে বলে- আমি সরকারি খাস জায়গা দুই দাগের ভরাট করেছি এবং কাজ এখনো চলছে এটা একবারে সত্য। তবে আমি কোন স্হাপনা নির্মাণ করার উদ্দেশ্য এই জায়গা ভরাট করছিনা।সরকারি খাস জায়গার সাথে লাগানো আমার একটা বড় জায়গা আছে, সরকারি খাস জায়গাটি যেহেতু একটি খাই বা পুকুরের মতো জায়গা। ঐখানে প্রতিনিয়ত আমার জায়গা ভেঙে ভেঙে পড়তেছে বিধান আমি সরকারি খাস জায়গাটি নিজের টাকায় ভরাট করে দিচ্ছি যাতে এটা একটা সমতল ভূমিতে পরিণত হয় এবং আমার জায়গাটি আর ভেঙে না পড়ে।
তাহলে এই কাজ করতে আপনি সরকারি কোন দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিলেন না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল হক কাগজ জানান আমি তো জায়গা দখল করে নিচ্ছি না! তাহলে আমি কেন সরকারি কর্মকর্তার কাছে অনুমতির জন্য যাবো?
বিষয়টি নিয়ে এখন পটিয়া উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়নের কোলাগাঁওর টেকে দু’পক্ষের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজমান।জায়গাটির অবস্থান কোলাগাঁও টেকের চট্টগ্রাম- ধলঘাট পাচুরিয়া লাইনের একেবারে মুল সড়কের পাশে।
সর্বশেষ এই বিষয়ে পটিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনাব রয়া ত্রিপুরা এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- বিষয়টি আমি মুঠো ফোনে গতকালই জেনেছি। গতকাল শনিবার অফিস বন্ধ থাকায় আমি কাউকে পাঠাতে পারিনি, আবার আজ সকালে স্হানীয় বাসিন্দা রুস্তম আলী নামের এক জন লোকের একটি লিখিত অভিযোগও পেয়েছি। তবে আমি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার আগেই সকালে অফিসে এসেই আমার অফিসের দুইজন স্টাফ ঘটনাস্হলে পাঠিয়েছি।উনারাও ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন এবং সাথে কাজ বন্ধ করে যেসব মাটি সরকারি খাস জায়গার উপর ফেলেছে এগুলো তুলে নেওয়ার জন্য আমার পক্ষ থেকে নির্দেশ দিয়ে এসেছেন।তিনি জানান বিষয়টি আমি খুবই গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি এবং আগামীকাল আবারও বিষয়টি আমি মনিটরিং করে দেখবো। তারপরও যদি কথা না শুনে কেউ সরকারি খাস জায়গায় মাটি ভরাট ও স্হাপনা নির্মাণ বা দখল করতে চায়,তাহলে আমি সরকারি নিয়মনীতি ও আইনানুযায়ী ব্যবস্হা গ্রহণ করতে বাধ্য হবো।
পটিয়া উপজেলা এসি ল্যান্ড বলেন -আপনারা আমাকে সহযোগিতা করুন আমি পটিয়া উপজেলাতে সরকারি খাস জায়গা দখলের মতো কোন অন্যায় কাজকে প্রশ্রয় নিবো না এবং সরকারি খাস জায়গা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ভরাট দখলের কোন সুযোগ নেই।