বোদা উপজেলায় ফলের বাগান ভেঙে দেওয়ায়সহ প্রাননাশের থানায় পুলিশের কাছে অভিযোগ
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় প্রবাসীর ফলের বাগানের বেড়া ভেঙ্গে দিয়ে উল্টো মালিকপক্ষের লোকজনকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সস্প্রতি বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের সরকারপাড়া এলাকায় এঘটনাটি ঘটেছে। এঘটনায় বোদা থানা পুলিশ বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে ভূক্তভোগীদের পক্ষ থেকে। তবে পুলিশের কার্যত কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় নি।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের সরকারপাড়া এলাকায় প্রবাসী ও রেমিট্যান্স যোদ্ধা নবীউল আলম সুজন এবং নাসির উল আলম সুমনের পৈতৃক জমি রয়েছে। সস্প্রতি ওই এলাকার একটি জমিতে তারা কদ বেলের বাগানের জন্য চাষাবাদ শুরু করেন। পরে সেই জমিতে গাছ লাগিয়ে বাগানের বেড়া দেয়া সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু গত ২১ সেপ্টেম্বর মাসের বাগানের বেড়া লাগানো হলে পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর বেলা ১১ টার দিকে পার্শ্ববর্তী জমির মালিক নাজমুন নাহারের নির্দেশে একই এলাকার লালু, শফিকুল, হুমায়ূন, শাহজাহান, দুলাল, মউর, মনির, মহিদুল, রুপা, শাহিনুর, খতিবর, রতন সহ অন্তত ৩০ জন লাঠি সোটা নিয়ে এসে সেই বেড়া ভেঙ্গে ফেলেন। একই সাথে সুমন ও সুজনের জমি দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত আশরাফ আলীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বেধরক মারধর ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এসময় তার হাত কেটে যায়। এসময় তাকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়। পরে তারা হুমকি দিয়ে বলেন, আবারো বেড়া নির্মাণ করা হলে তারা ভেঙ্গে ফেলবেন। পরে আশরাফ আলী কোন উপায়ন্তর না পেয়ে ৯৯৯ এ ফোন করে থানা পুলিশে অবগত করেন।
সুমন ও সুজনের জমি দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত আশরাফ আলী বলেন, আমার মালিকের কদবেলের বাগানের জমিটি অনেকদিন ধরে পড়ে ছিল। আমরা সেখানে নতুন করেন বাগান করেছি। সেই সাথে একটি বেড়াও দিয়েছি। তবে পড়ে থাকা ওই জমির উপর দিয়ে কিছু মানুষ হাটা চলা করতো। তারা যাদের জমি দেখাশোনা করেন তাদের জমিনের উপর দিয়ে রাস্তা করে তারা চলাফেরা করতে পারেন। বর্ষা শেষ হলে তো আমরা স্থায়ী বেড়া দিবো। কিন্তু তারা তা না করে তারা আমাদের বেড়া দিতে দিবেনা। আমার মালিকের জমিতে তিনি চাষাবাদ করেছেন। কিন্তু তারা আমাদের বেড়া ভেঙ্গে দিয়ে আমাদেরই হুমকি দিচ্ছেন। আমাকে নাকি মেরে ফেলবেন। আমি এর সঠিক বিচার চাই। আমাদের বাগানের যেন কেউ ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য প্রশাসনের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছি।
স্থানীয় মনির হোসেন বলেন, আমরা নাজমুন নাহারের জমি চাষাবাদ করি। তবে সুজন ও সুমনের পরিত্যাক্ত জমিনের উপর দিয়ে আমাদের হাটাচলা করতে হয়। আমাদের ৬ টি পরিবার এখানে থাকি। আমাদের তিনটি ভ্যান রয়েছে। সেগুলো দিয়ে ইনকাম করে খাই। কিন্তু তারা এখন বাগান করেছে বেড়া দিয়েছে। তারা বেড়া দিলে তো আমরা ভ্যান নিয়ে চলাচল করতে পারবো না। আর আমাদের মহাজন তাদের বেড়া ভেঙ্গে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছেন না হলে বাড়ি ছেড়ে তিনঘন্টার মধ্যে চলে যেতে বলেছেন। আমরা কি করবো কোন উপায় না পেয়ে আমরা তার নির্দেশ মেনেছি। যদিও এটা আমাদের ভূল হয়েছে। তাদের বেড়া ভাঙ্গা ঠিক হয়নি।
এবিষয়ে নাজমুন নাহার বলেন, ওই জমি কি সুমন সুজনের। তারা কি কোন কাগজ দেখাতে পারবেন। জমি তো ভাগবাটোয়ারা হয়নি। ওখানে তো আমারও জমি আছে। আমি তাদের সাথে কোন বিতণ্ডায় জড়াতে চাই না। তারা কেন মানুষের রাস্তা বন্ধ করবে। সেখানে তো কিছু মানুষ বসবাস করে। তারা যারই চাষাবাদ করুক। আর জমি ভাগবাটোয়ারা হলে কে কোন পথ দিয়ে চলাচল করবে সেটা পরে ভাবা যাবে।
বড়শশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, আমরা মানবিক কারণে রাস্তাটি খুলে দিতে বলেছি। বর্তমানে খোলাই আছে রাস্তাটি। সব দিকে তো তাদেরই জমি। একটু জমি ছেড়ে দিলে কি হয়। পশ্চিমে বাশঁঝাড় আর নদী। মানুষগুলো চলাচলের জন্য তাদের খুলে দিতে বলেছি। বর্তমানে ওই অবস্থাতেই আছে।
বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দীন বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।