
গৃহিণী হয়েও মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে ছন্দা আদক – যোগা প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জয়ী।
রিপোর্টার, সমরেশ রায় ও শম্পা দাস , কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, আজ ২রা নভেম্বর রবিবার, বাঁকুড়ার জেলার বোরজোড়ার, পাখান্নার প্রত্যন্ত গ্রামের গৃহবধূ ছন্দা আদক, বিভিন্ন দেশের যোগা প্রতিযোগিতায় আজ পুরস্কার জয়ী, কলকাতা সহ জেলাস্তর, ডিস্ট্রিক্ট, ন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনাল লেভেল প্রতিযোগিতায়। যোগায় তাকে এনে দিয়েছে মনের বল, বিভিন্ন শিক্ষকের সহযোগিতায় এবং তাহাদের প্রশিক্ষণে। এর সাথে সাথে বাপের বাড়ি ও মায়ের বাড়ির সকল পরিবারের সহযোগিতা।
আজ ৩১ বছর বয়সে বেশ কিছু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন, তাহার প্রথম যোগা প্রশিক্ষণ শুরু হয় ২০২৪ সালে যোগা নেচার থেরাপী দিয়ে, তারপর ইউএস এফ অধীনে অনলাইনে অন্যান্য যোগা প্রশিক্ষণ শুরু করেন, এখান থেকে এই যাত্রা শুরু হয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের মাধ্যমে। যে সকল শিক্ষক ও শিক্ষিকারা ছন্দা আদককে প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে ও সহযোগিতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন তাহারা হলেন সুস্মিতা দেবনাথ ও প্রদীপ গুড়িয়া, আর একজন হলেন যিনি সব সময় সাপোর্ট করে থাকেন, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য পরামর্শ দেন, এবং যিনি নিজের দায়িত্বে নিয়ে যান, তিনি হলেন রেখা সিংহ,যাহার দ্বারা দেশ-বিদেশের প্রতিযোগিতায় যাওয়ার সুযোগ পান। ছন্দা আদক প্রথম যোগা কোর্স শুরু করেন জয়রামবাটী থেকে, আর প্রথম যোগা প্রতিযোগিতায় জয়ী হন একুশে জুন, প্রতিযোগিতায় জয়ী হন বাঁকুড়া থেকে। তারপরই একের পর এক ডিস্ট্রিক্ট, ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল যোগা প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়ে আসেন প্রতিযোগীদের হারিয়ে।
যাহারা সবসময় আমাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তোমাকে উৎসাহ যোগান, তাহারা হলেন শিক্ষিকা সুস্মিতা দেবনাথ, প্রদীপ গুড়িয়া, রেখা সিংহ, এবং আমাদের পরিবারের মধ্যে, স্বামী সন্দীপ মন্ডল চাকরী সূত্রে সিঙ্গাপুর, সমরেশ আদক, সুকুমার মন্ডল, শীতলা মন্ডল সহ অন্যান্যরা।
যাহাদের সহযোগিতায় আজ আমি নিজেকে ধন্য মনে করি, যাহারা আমাকে সবসময় সাহস যোগীয়ে এসেছেন, যাহারা আমাকে, কলকাতা, শিলিগুড়ি, মালয়েশিয়া, দীঘা কাপে, এবং বিভিন্ন ডিস্ট্রিক্ট লেভেলের যোগা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের উৎসাহিত করেছেন, যাদের উৎসাহে আমি পুরস্কার একের পর এক ছিনিয়ে আনতে পেরেছি।
ছন্দা আদক জানান, আমাদের পরিবারের বাবার সুগার ছিল, আমি ২০২৩-২৪ সালে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম , আমি ভেঙে পড়েছিলাম, তখনই নিজের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য মনে আগ্রহ বাড়ে, যদি যোগা কে আমি সুস্থ রাখার জন্য একটু একটু করে প্র্যাকটিস করি, ওখান থেকেই শুরু হয় আমার যাত্রাপথ। তারপর থেকেই আমি আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠি , আজ আমি বিনা ওষুধে সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছি, এখান থেকেই যোগায় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেওয়া এবং সুস্মিতা দেবনাথ এর হাত ধরে যোগায় এগিয়ে যাওয়া,
আমার ইচ্ছে এইরকম একটি যোগা প্রশিক্ষণ স্কুল খোলার, যেখানে ছোট ছোট বাচ্চাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারব, এবং শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য, যেহেতু চাকুরী সূত্রে স্বামী সিঙ্গাপুরে থাকেন, আমি তাই অনলাইনের মাধ্যমেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখবো।, যাহাতে সমস্ত জায়গায় এই প্রশিক্ষণ দিতে পারি, আর সিঙ্গাপুর যোগার একটা উপযুক্ত জায়গা তাই সিঙ্গাপুর ও বাঁকুড়াতেও একটি প্রশিক্ষণ সেন্টার রাখবো। যাহা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষ ওষুধ না খেয়ে সুস্থ থাকতে পারে।
এখন দেখা যাচ্ছে কোন অসুস্থ মানুষ কোন রোগের জন্য ওষুধ খেতে খেতে সেই ওষুধ আর কাজ করে না।, কিন্তু যোগার মাধ্যমে যদি কিছু ব্যায়াম করেন সেই মানুষটি আস্তে আস্তে সুস্থ হতে পারে এবং সুস্থ হয়ে থাকতে পারে, তাই সকল মানুষের দরকার কিছু না কিছু ব্যায়াম করা, আর ব্যায়াম করার জন্য কোন নির্দিষ্ট বয়সের প্রয়োজন হয় না, যেকোনো বয়সেই কিছুক্ষণ ব্যায়াম করতে পারে। ব্যায়াম মানুষের সুস্থ রাখার উপযুক্ত ঔষধ। যাহা আমার মনবল কে ফিরিয়ে এনেছে। যাহার মাধ্যমে দেশ বিদেশের বেশকিছু মানুষ আমাকে চিনেছে।।
আর সকলের একটাই বার্তা, এই সকল প্রতিভাদের পাশে যদি সরকারের তরফ থেকে এবং অন্যান্য সংস্থার তরফ থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন, হয়তো এই সকল প্রতিভারা আরো এগিয়ে যেতে পারবে।