এক কলেজে পাঁচ শিক্ষার্থীকে পড়িয়েছে ১৪ শিক্ষক, তবুও সবাই ফেল!
মোঃসুলতান মাহমুদ,গাজীপুর প্রতিনিধি।
মাত্র ৫ জন শিক্ষার্থীর পড়ানোর জন্য ছিলেন ১৪ জন শিক্ষক। তবুও কেউই পাস করতে পারেনি এবারের এইচএসসি পরীক্ষায়। করেছে সবাই ফেল। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা পাবলিক কলেজে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরের দিকে বিষয়টি জানাজানি হলে চারদিকে চাঞ্চল্যকর কানাঘুঁষা সৃষ্টি হয়েছে। এরআগে, ১৬ অক্টোবর সকাল ১০টায় এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ফলাফলে জানা যায়, মাওনা পাবলিক কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৫ জন শিক্ষার্থীর সবাই অনুত্তীর্ণ হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩জন মানবিক ও ২জন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। ২জন এক বিষয়েও পরীক্ষা দিয়েছেন। তারাও পাস করতে পারেনি।
শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধিনে এবারের এইচএসসিতে অংশগ্রহণ করেছিল ২ হাজার ৮৮১ জন। তারমধ্যে পাস করেছে ১ হাজার ৫৪৭জন। জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৪৭ জন শিক্ষার্থী। উপজেলায় পাসের হার এসেছে, ৫৩.৭০।
কয়েকজন অভিভাবক ও স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করেই না। কলেজেরও পড়াশোনার পরিবেশ দিন দিন নষ্ট হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা এখন আর ক্লাসে নিয়মিত আসে না; বরং সময় কাটায় টিকটক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ফলে শিক্ষা ব্যবস্থায় নেমে এসেছে ভয়াবহ অবনতি। এখনও সময় আছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন— ১৪ জন শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও যদি ৫ জন শিক্ষার্থীর একজনকেও পাস করানো না যায়, তবে, শিক্ষকরা আসলে কী করছেন।
রমিজ উদ্দিন নামের এক অভিভাবক বলেন,’ এমনিতেই দেশে শিক্ষার পরিবেশ নেই। আবারও এসব নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে আমরা হতাশ। শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে বিষয়গুলো নিয়মিত তদারকি করা দরকার ছি।’
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান রুবেল হোসেন বলেন,’ আমাদের ক্যাম্পাসটি স্থানান্তর হয়েছে। এই নড়াচড়ার কারনে একটু নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এছাড়াও আমার কলেজে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা রেগুলার কলেজে আসেনি। তবে, শিক্ষকগন নিয়মিত প্রতিষ্ঠান ছিল। তাই, পাস করেনি।’
উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম আকাশ বাংলা কে বলেন, ওই কলেজ থেকে মোট ৫ শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। ফলাফলে দেখা গেছে, তারা সবাই ফেল করেছে। আমরা চিঠি ইস্যূ করবো। ফেল করার কারণ হিসেবে তারা কি জবাব দেয় তা খতিয়ে দেখা হবে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’