সাভারের সরকারি জমি লীজ নিয়ে স্ট্যাম্পে লিখে বিক্রির অভিযোগ, তদন্তের নির্দেশ
মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ :
সাভার নামা বাজারের ঐতিহ্যবাহী মাছ বাজারটি কৌশল অবলম্বন করে লীজ নিয়ে জেলেদের কাছে ৮ লক্ষ টাকায় স্ট্যাম্পে লিখে বিক্রির (হস্তান্তর) অভিযোগ উঠেছে । এই ঘটনা জানতে পেরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নোটিশ করেছেন লীজ গ্রহীতা আতিকুর রহমানকে। দুই কার্য দিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হলেও সময় অতিবাহিত করে নোটিশের জবাব দেন তিনি। তবে সন্তোষজনক জবাব না হওয়ায় বিষয়টি তদন্তের জন্য একজন সার্ভেয়ারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এদিকে সরকারি জমি লীজ নিয়ে বিক্রির (হস্তান্তর) ঘটনায় সাভার বাজার জুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা।
সাভার ভূমি অফিসের নথি থেকে জানা গেছে, সাভার নামা বাজার মাছ বাজারটি সাভার মৌজার ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ জমি 'ক' তালিকাভুক্ত ভিপি সম্পত্তি। গত ৩ সেপ্টেম্বর সাভার বাজার এলাকার হাজী আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র আতিকুর রহমান ৫১৭৫ টাকায় জমিটি লীজ নিয়ে 'লীজকৃত সূত্রে মালিক' লিখা সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়।
জানা গেছে, যুগ যুগ ধরে যারা বাজারে মাছ বিক্রি করতো সেই রাজবংশী সম্প্রদায়ের লোকদের লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরে এক সমঝোতার মাধ্যমে রাজবংশী সম্প্রদায়ের জেলেদের কাছ থেকে স্ট্যাম্পে লিখে ৮ লক্ষ টাকায় লীজ নেয়া সম্পত্তি (হস্তান্তর) বিক্রি করে। এই ঘটনার সাথে সাভার উপজেলা ভূমি অফিসের কয়েকজন দালালও জড়িত রয়েছে।
সাভার উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির ওসমান গনি বলেন, বিষয়টি আমরা জানতে পেরে ১১ নভেম্বর লীজ গ্রহীতা আতিকুর রহমানকে লিখিত নোটিশ করা হয়েছে। দুই কার্য দিবসের মধ্যে এসিল্যান্ড অফিসে হাজির হয়ে নোটিশের জবাব দিতে বলা হলে মঙ্গলবার লিখিত জবাব দেয়।
সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, লীজের সম্পত্তি হস্তান্তর ও বিক্রির কোন নিয়ম নেই। এ ধরনের ঘটনা প্রমাণিত হলে এবং লীজের শর্তভঙ্গ করলে লীজ বাতিল হয়ে যাবে।
নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল আমিন বিষাক্ত তদন্তের জন্য সার্ভেয়ারকে দায়িত্ব দেন।
তদন্ত কর্মকর্তা সাভার উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ইব্রাহিম খলিল বলেন, লীজ গ্রহীতা আতিকুর রহমান নোটিশের জবাবে উল্লেখ করেছে সে লীজকৃত জমি বিক্রি করেনি এবং কাউকে স্ট্যাম্প করেও দেয়নি, টাকাও নেয়ই। বিষয়টি তদন্ত করতে আমি ঘটনাস্থলে যাব।
লীজের সম্পত্তি স্ট্যাম্প করে বিক্রির বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুর রহমান বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সাভার পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এ কে এমন আসাদুজ্জামান সোহাগ বলেন, মাছ ব্যবসায়ীরা আমার কাছে এসেছিল আমি তাদের পাশে থাকব আশ্বস্ত করেছি। এই মাছ বাজারটি ঐতিহ্যবাহী মাছ বাজার। অনেক ব্যবসায়ীর স্মৃতি জড়িত রয়েছে। লীজের নামে মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ক্ষতিগ্রস্ত মাছ ব্যবসায়ীদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
তবে লীজ গ্রহীতা আতিকুর রহমান বলেন, লীজ নিয়ে জমি আমরা বিক্রি করি নাই। আমরা দান করে দিয়েছি। স্ট্যাম্প লিখে জমি হস্তান্তরের বিষয় জানতে চাইলে বলেন, স্ট্যাম্প লিখেই দান করা হয়েছে ওখানে বিক্রির কথা উল্লেখ নেই। এদিকে আজ সেখানে সাভার উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার পরিদর্শন করে জমিটির খোঁজখবর নেন।